ঢাকাসোমবার , ৩ মার্চ ২০২৫
  1. আন্তর্জাতিক
  2. ইসলাম
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. দুর্ঘটনা
  6. বিনোদন
  7. রাজনীতি
  8. লক্ষ্মীপুর
  9. শিক্ষাঙ্গন
  10. সম্পাদকীয়
  11. সারাদেশ
  12. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আজ আল্লামা লুৎফর রহমান (রাহি) এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

ডেস্ক এডিটর
মার্চ ৩, ২০২৫ ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আজ ৩ মার্চ আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাচ্ছিরে কুরআন, বিশিষ্ট ইসলামিক ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা লুৎফর রহমান (রাহিঃ) এর ১ম মৃত্যুবার্ষিকী।

গত বছরের ৩ মার্চ রবিবার এই কিংবদন্তী স্কলার কোটি বাঙ্গালিকে কাঁদিয়ে মহান রবের শাহী দরবারে পাড়ি জমান। গত শতকে জন্ম নেয়া এই দায়ী ইলাল্লাহ ছাত্র জীবন থেকে অর্থাৎ ১৯৬৬ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ৬০ বছরের কাছাকাছি সময় ধরে বাতিলের রক্তচক্ষু ভ্র-কুটি দলিত মথিত করে কুরআনের ময়দানে ইকামতে দ্বীনের এই কন্টকাকীর্ণ পথে নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন।
শিক্ষা জীবনে মাওলানা বেশ কয়েকবার উপমহাদেশে ইসলামী আন্দোলনের ফাউন্ডার আল্লাম মওদুদী (রাহিঃ) এর সাহচর্য এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে আল্লামা মওদূদী (রাহিঃ) এর সরাসরি খেদমত করার সুযোগ পেয়েছেন। স্বাধীনতা-পূর্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে আল্লামা নিজ এলাকা ছেড়ে শশুরালয়ে ফরিদগঞ্জে আশ্রয় নেন। হানাদার বাহিনী খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে গেলে মাওলানার শশুর বাড়ির লোকজন নৌকায় করে চাঁদপুর সেখান থেকে পরবর্তীতে মাওলানাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়। ঢাকায় এসে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় তাবলিগে যোগ দিবেন। পরে শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী (রাহিঃ)সহ কাকারাইল মাসজিদে থাকতে শুরু করেন।
সেখানেও সকলের চোখে সন্দেহ তৈরী হলে উনারা কয়েকজন মিলে ঢাকার বাহিরে অন্যত্রে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পরবর্তীতে মাওলানা লুৎফর রহমান তার শৈশবে বেড়ে ওঠা পটুয়াখালীর কালাইয়া গিয়ে (তৎকালিন প্রভাবশালী নেতা) আ. স. ম ফিরোজ সাহেব এর বাসায় থাকতে শুরু করেন। এবং ধাপে ধাপে তাদের সহযোগিতায় সেখান থেকে আবার মাহফিল এর কার্যক্রম শুরু করেন। এভাবেই মাওলানা স্বাধীনতা উত্তর ঢাকায় চলে আসেন।
শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথে আবারো সরাসারি কাজ শুরু করেন। ইধহশরহম ংুংঃবস রিঃযড়ঁঃ রহঃবৎবংঃ সুদ বিহীন ব্যাংক অর্থাৎ ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালিন মাওলানার অসামান্য অবদান এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজ মাওলানা নিজেকে পরিপূর্ণভাবে নিয়োজিত করতে পেরেছেন। কিংবদন্তী মুফাচ্ছিরে কুরআন শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহিঃ) সহ একই সাথে সত্তরের দশক থেকে মাওলনা দেশ বিদেশে কুরআনের বাণী ফেরী করে বেড়িয়েছেন। আশির দশকে হারাম শরীফের সম্মানিত খতিব সাহেব এর আমন্ত্রনে মাওলানা একটি টিমসহ সৌদি আরবের রয়্যাল গেস্ট হিসাবে সেখানে গমন করেন এবং কাবার ভিতরে প্রবেশের সুযোগ লাভ করেন।
সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে মাওলানা কক্সবাজারের টেকনাফে অবস্থিত তৎকালিন রঙ্গিখালী আলীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।
দীর্ঘদিন যাবত এরাবিয়ান প্রতিষ্ঠান আই আই আর ও এবং হায়াতুল ইগাসাহ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসাবে কর্মরত ছিলেন। মিরপুর সমাজ কল্যাণ মসজিদের খতিব হিসাবেও দীর্ঘদিন দায়িত্বরত ছিলেন। সবশেষে বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাচ্ছিরিন এর সভাপতি হিসাবে দায়িত্বরত অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন।
অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং সাদামাট জীবনের অধিকারী মাওলানা গবেষক এবং দার্শনিক হিসাবে খ্যাত ছিলেন। জীবনের দুই তৃতীয়াংশ সময় ধরে দায়ী ইলাল্লাহর কাজে দেশ/বিদেশে নিজেকে নিয়োজিত রাখা স্বত্ত্বেও নির্লোভ এই স্কলার নিজের জন্য একটা ঘর পর্যন্ত করেননি। ৪৪ বছর ধরে একটা ভাঙ্গা টিনের ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ সাক্ষাত করতে এসে মাওলানার ঘর দেখে অবাক হয়ে যেতেন। মাহফিল থেকে প্রাপ্ত সম্মানি বিভিন্ন মাসজিদ মাদরাসায় দান করে দিতেন। নিজে শুধু চলার খরচটাই রাখতেন।
ব্রিটেন, জাপান, আমেরিকাসহ অসংখ্য দেশে মাওলানা কুরআনের দাওয়াত দিয়েছিলেন। ১ মার্চ ১৯৪০ সালে জন্ম গ্রহণ করা এই মাওলানা ৩ মার্চ ২০২৪ সালে ইন্তেকাল করেন। বায়তুল মোকাররম মাসজিদে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। ৪ মার্চ নিজ এলাকায় মাওলানাকে দাফন করা হয়। মাওলানা স্ত্রী, ৫ মেয়ে, ২ ছেলে, নাতি নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মাওলানা লুৎফর রহমান সাহেবের আলোচনাগুলোর মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলেনের জন্য যে রসদ রেখে গেছেন মহান আল্লাহপাক কিয়ামত পর্যন্ত ইকামতে দ্বীনের ভাইদের অনুপ্রেরনা হিসাবে সেগুলোকে কবুল করুন। আল্লাহপাক মাওলানাকে জান্নাতের মেহমান হিসাবে কবুল করুন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।