ঢাকাশুক্রবার , ২৩ মে ২০২৫
  1. আন্তর্জাতিক
  2. ইসলাম
  3. খেলাধুলা
  4. জাতীয়
  5. দুর্ঘটনা
  6. বিনোদন
  7. রাজনীতি
  8. লক্ষ্মীপুর
  9. শিক্ষাঙ্গন
  10. সম্পাদকীয়
  11. সারাদেশ
  12. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বকশীগঞ্জে দশানী নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শতশত বসত ভিটা।

ডেস্ক এডিটর
মে ২৩, ২০২৫ ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ রিফাত আলী জামালপুর জেলা প্রতিনিধি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তিন কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গন বসত ভিটা সহ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বার বার নদী ভাঙ্গন কবলে পড়ে এসব মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়ছে। ভাঙ্গন রোধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিন থেকে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও প্রবল বর্ষণে মেরুরচর ইউনিয়নের পাঁচটি ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন দেখা শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন শব্দে ঘুম হারাম হয়েয়ে গ্রামের মানুষের। এক সপ্তাহের টানা ভাঙ্গন অনেক পরিবারই এখন নি:স্ব। ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের। প্রাকৃতির নির্মমতায় চোখের জলে ভাসছে ভাঙ্গন কবলিতরা।

নদী ভাঙ্গন মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরা কান্দি, আইরমারী মন্দী পাড়া, উজান কলকিহারা, কলকিহারা ও খাপড়া পাড়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের বসত ভিটা নদী ভাঙ্গন শিকার হয়েছে। অপরদিকে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী, বাংগাল পাড়া ও বালুগ্রামের ফসলি জমিও বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে।

ইতোমধ্যে মেরুরচর ইউনিয়নের ঘুঘরা কান্দি বাজার, ১টি মসজিদ ও ১টি গ্রামীণ রাস্তা নদীর গর্ভে চলে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ যোগাযোগের মাধ্যম মুন্দী পাড়া অবস্থিত এলইজিইডির একটি বীজ, মন্দী পাড়া বাজার ও শত শত বিঘা ফসলি জমি ঘরবাড়ী। প্রতি বছর বন্যা এলেই প্রকৃতির আজাব শুরু হয় নদী ভাঙ্গা মানুষের। নদী ভাঙ্গনের ফলে বসত ভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবার গুলোর। নদী ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ না থাকার কারণে ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছে না। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ দুর্দশায় পড়লেও এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
স্থানীয়দের দাবি মেরুরচর ইউনিয়নের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করায় নদী দশানী ও শাখা নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দেয় একারণেই আরও বেশি ভাঙ্গছে দশানী নদী। এবারের ভাঙ্গনে শুধু এক পাড়ে নয় দু পাড়েই ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রায়ই ৩০টি পরিবারের মানুষ। ভাঙ্গনে ভিটা মাটি হারিয়ে বাড়ী ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এসব পরিবার বার বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হওয়ায় আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন। একারণে সামাজিক মর্যাদাও হারিয়েছেন তারা।

স্থানীয়দের দাবি ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে অস্তিত্ব হারাতে পারে ভাঙ্গনের শিকার আটটি গ্রাম। তাই অবিলম্বে বাঁধ নির্মাণ ও ডাম্পিং ফেলে এই গ্রাম গুলোকে ভাঙ্গন থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন
ভাঙ্গন কবলিত ঘুঘরা কান্দি গ্রামের কৃষক, মোতালেব হোসেন, মকবুল হোসেন বলেন, দশানী নদীর ভাঙনে আমরা নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। বার বার ভাঙ্গনের ফলে মানচিত্র বদলে যাচ্ছে এই এলাকার। আমরা ভিটা মাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে বিপদের মধ্যে রয়েছি। তাই ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অত্র ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান, ঘর বাড়ী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অতিদ্রæত ডাম্পিং করা না হলে এই পাঁচ গ্রামের কোন অস্তিত্ব থাকবে না। তাই আমরা জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সুমন জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করতে ত্রাণের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, মেরুরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তা আমরা অবগত হয়েছি। যেসব পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হছেছেন তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে এবং ভাঙ্গন বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।